জবা ফুলের উপকারিতা ও অপকারিতা

জবা ফুলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে সঠিক ধারণা যদি কোথাও না পেয়ে থাকেন। তাহলে আমাদের এই আর্টিকেলটি প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগ দিয়ে অবশ্যই পড়বেন। তাহলে আপনি জবা ফুল ও পাতা সম্পর্কে সঠিক ধারণা পাবেন ইনশাআল্লাহ।

জবা ফুলের উপকারিতা ও অপকারিতা

আমরা এই আর্টিকেলটিতে জবা ফুল সংক্রান্ত সকল বিষয়ে লিখে রেখেছি। কিভাবে জবা ফুল ব্যবহার করবেন, কিভাবে জবা পাতা ব্যবহার করবেন এছাড়াও আরো অনেক বিষয়ে সঠিক তথ্য দিয়ে আর্টিকেলটি লেখা হয়েছে। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক জবা ফুলের উপকারিতা ও অপকারিতা সম্পর্কে।

পোষ্ট সূচিপত্রঃ জবা ফুলের উপকারিতা ও অপকারিতা

চুলের যত্নের জবা ফুলের উপকারিতা

চুলের যত্নের জবাব হলে একটি প্রাকৃতিক উপাদান। এই প্রাকৃতিক উপাদানের সঠিক ব্যবহার জানলে চুলের যত্নসহ আরো অনেক ধরনের উপকার পাওয়া যায়। চুলের যত্নে জবা ফুলের বিভিন্ন ধরনের উপকার রয়েছে। এটি প্রাচীনকাল থেকেই চুলের যত্নে ব্যবহার হয়ে আসছে। চুলের যত্নে এটি কার্যকর ও নিরাপদ প্রাকৃতিক উপাদানের হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক চুলের যত্নের জবা ফুলের উপকারিতা গুলো।

চুলের বৃদ্ধি ও চুল পড়া কমাতেঃ জবা ফুলের মধ্যে থাকা অ্যামিনো এসিড এবং ভিটামিন চুলের গোড়ায় পুষ্টি যোগান দেয়। আর চুলের গোড়ায় যদি পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ থাকে ভিটামিন থাকে তাহলে চুল খুব তাড়াতাড়ি বৃদ্ধি হতে থাকবে। জবা ফুলের তেল বা পেস্ট আপনি তৈরি করতে পারেন। এবং এই তৈরিকৃত পেস্ট বা তেল চুলের গোড়ায় লাগালে এটি চুলের গঠনের সাহায্য করে। যার ফলে চুল পড়া অনেক কমে যায়। এটি নিয়মিত ৭ দিনে ২-৩ বার লাগালে অনেক উপকার পাওয়া যাবে।

ড্যানড্রাফ প্রতিরোধ ও চুলের উজ্জ্বলতাঃ জবা ফুলে থাকা এন্টি ব্যাকটেরিয়াল ও এন্টিফাঙ্গাল এই দুইটি গুনাগুন মাথার ত্বকের ফাঙ্গাস এবং খুশকির সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। ফলে চুলের গোড়া অনেক মজবুত থাকে। নিয়মিত জবাব ফুলের পেস্ট বা তেল ব্যবহারের ফলে চুলের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়। এবং মুসলিম ও ঝলমলে হয়ে ওঠে। যার ফলে চুল দেখতে অনেক সুন্দর হয়ে যায়।

প্রাকৃতিক কন্ডিশনারঃ জবা ফুল চুলের জন্য একটি প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে পরিচিত। কারণ জবা ফুলের জন্য এক ধরনের কন্ডিশনার এর মত কাজ করে। এটি চুলকে নরম করে এবং চুলে জট হওয়া থেকে মুক্ত রাখে।

চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধ ঃ অনেকের দেখা যায় যে চুলের আগা ফেটে যায় এটি একটি সাধারণ সমস্যা বটে। কারন আমাদের কাছে আছে প্রাকৃতিক এক ধরনের সমাধান যেটা ব্যবহার করলে চুলের আগা ফাটা এই সমস্যার সমাধান হয়। সেই উপাদানটি হলো জবাব ফুল, জবাব ফুলের তেল তৈরি করে চুলের গোড়া থেকে আগা পর্যন্ত দিলে চুল অনেক মুসলিম হয় এবং চুলের আগা ফাটা প্রতিরোধ হয়।

জবা ফুলের রস খেলে কি হয়

জবা ফুলের রসে মানব শরীরের জন্য অনেক উপকারী উপাদান রয়েছে। তবে এর সাথে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা ও রয়েছে। আপনি যদি জবাব ফুলের রস খেতে চান তাহলে অবশ্যই একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেবন করবেন। অথবা জবাব ফুলের রসের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা অপকারিতা দিকগুলো জেনে তারপরে রস খাবেন। জবা ফুলের রসে অনেক উপকারী যেগুলো নিচে দেওয়া হলো। মনোযোগ দিয়ে অবশ্যই সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়বেন।


জবা ফুলের রসে বিভিন্ন ধরনের উপকারী উপাদান থাকায় এটি শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ, ওজন কমানো্‌, পঞ্চতন্ত্রের সুরক্ষা করতে সাহায্য করে। সঠিক মাত্রায় খাওয়ার ফলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও ওজন কমানো সম্ভব। এছাড়াও ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করে তোলে এবং ব্যথা কমাতে সাহায্য করে। আবার জবা ফুলের রস অতিরিক্ত সেবনের ফলে রক্তচাপ অতিরিক্ত কমে যেতে পারে। পেটের বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে, গর্ভাবস্থায় মহিলাদের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। এবং হরমোনাল ভারসাম্য বিঘ্ন ঘটাতে পারে।

জবা ফুল মাথায় দেওয়ার নিয়ম

জবা ফুল মাথায় দেওয়ার বিভিন্ন ধরনের মাধ্যম বা উপায় রয়েছে। তার মধ্যে থেকে জবা ফুল মাথায় দেওয়া ৩নটি নিয়ম নিচে দেওয়া হলো।

জবা ফুল দিয়ে তেল তৈরি করার নিয়মঃ
উপকরণগুলোঃ 
  • ৫-৬ টি একদম তরতাজা জবা ফুল।
  • এক কাপ নারিকেলের তেল। এছাড়া বাদামের তেল নিলেও হবে।
সঠিক পদ্ধতিঃ 
  • ৫-৬টি যে জবা ফুল  নিলেন সেই ফুলগুলো থেকে খুব ভালো হবে পাপড়িগুলো সংগ্রহ করে নিন। এরপরে সেই পাপড়িগুলো একটি পরিষ্কার পানিতে ভালোভাবে ধরে নিন।
  • একটি পরিষ্কার পাত্র নিন এবং পাত্রটির চুলায় বসিয়ে দিন। এবং চুলায় বসানো পাত্রটির ওপরে যে ১ কাপ নারিকেলের তেল বা বাদামের তেল নিয়েছিলেন সেই তেলটুকু ঢেলে দিন। এরপর গরম করতে থাকুন।
  • তেলের মধ্যে জবাব ফুলের পাপড়ি গুলো এবার ছেড়ে দেন। কিছুক্ষন পাপীগুলো তেলের মধ্যে দিয়ে গরম করতে থাকুন।
  • এরপরে পাপ এগুলো কালো হয়ে গেলে পাত্রটি চুলা থেকে নামিয়ে নিন। এরপর ঠান্ডা হতে দিন যে তেলটি তৈরি হলো সেটিকে।
  • তেলটি ঠান্ডা হওয়ার পর পরিষ্কার ছাকনি দিয়ে ভালোভাবে তেলটিকে ছেকে নিন এবং একটি পরিষ্কার বোতলের সংরক্ষণ করুন।
ব্যবহার পদ্ধতিঃ
  • জবা ফুলের তেল ৭ দিনে ২-৩ বার মাথার ত্বকে ভালো হবে লাগাবেন।
  • তেলটি মাথায় রেখে কমপক্ষে এক ঘন্টা অপেক্ষা করবেন। তারপরে চুল সুন্দরভাবে পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন।

জবা ফুলের পেস্ট তৈরি কিভাবে করবেনঃ
উপকরণ গুলোঃ
  • ৫-৬ টি একদম তরতাজা জবা ফুল।
  • অল্প একটু পানি (আধা কাপ )
সঠিক পদ্ধতিঃ 
  • জবা ফুলের পাপড়ি গুলো সংগ্রহ করুন এবং ভালোভাবে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিন।
  • একটি পেস্ট তৈরি করার জন্য পাপড়ি গুলো পিষে নিন। অথবা আপনি ব্লেন্ডার দিয়ে একদম পাউডার তৈরি করে নিতে পারেন।
  • যদি প্রয়োজন হয় তাহলে পানি ব্যবহার করে করে মসৃণ ভাবে পেস্ট তৈরি করে নিন।
ব্যবহার পদ্ধতিঃ 
  • পেজটি সরাসরি মাথার ত্বকে এবং চুলে লাগান। এমন ভাবে লাগাবেন যাতে চুলের গোড়া অব্দি সুন্দরভাবে পৌঁছায়।
  • পেস্টটি তুলে সুন্দরভাবে লাগিয়ে ৩০ মিনিট থেকে এক ঘন্টা অপেক্ষা করুন।
  • এরপর একটি স্বাস্থ্যসম্মত শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
জবা ফুল দিয়ে চা তৈরি করুনঃ
উপকরণগুলোঃ
  • দুই কাপ পানি।
  • ৫-৬ টি শুকনার জবা ফুল।
সঠিক পদ্ধতিঃ
  • দুই কাপ পানি একটি পাত্রের নিয়ে ফুটিয়ে নিন। এবং শুকনা জবা ফুল পানিতে দিয়ে দিন।
  • ১০-১৫ মিনিট ধরে ফোটাতে থাকুন।
  • ফুলের রং পানিতে মিশে গেলে এবং পানি লালচে হয়ে গেলে চুলা থেকে নামিয়ে পানি ঠান্ডা করতে দিন।
  • ঠান্ডা হয়ে গেলে এটি ছেকে আলাদা করে নিন।
  • এই চা চুল ধরার পর রিন্স হিসেবে ব্যবহার করুন। এটি চুলের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করে।
উপদেশঃ
  • জবা ফুলের যে কোন অবদান অর্থাৎ অতিরিক্ত তেল বা পেস্ট ব্যবহার করার ফলে, এই পেস্ট বা তেল কিছু পরিমাণে চুলের সাথে থেকে যেতে পারে, তার চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন।
  • ভালো ফলাফল পেতে হলে উপরোক্ত সকল নিয়মে নিয়মিত ব্যবহার করুন।

জবা ফুলের উপকারিতা গুলো

ত্বকের যত্নে কিভাবে উপকারি ঃ জবা ফুলের পেস্ট ত্বকে ব্যবহার করলে ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। এটি ত্বকের শুষ্কতার রোধ করতে ওরা এবং ফাটা ত্বক ঠিক করতে সাহায্য করে। এটি হচ্ছে এক ধরনের প্রাকৃতিক ময়েশ্চরাইজার। জবা ফুলে থাকা এন্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের বার্ধক্য প্রতিরোধে সহায়ক। সাপ্তাহিকভাবে নিয়মিত ব্যবহার করলে সুফল পাওয়া যায়।

ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেঃ শরীরের মেটাবলিজম বাড়াতে সাহায্য করে এই জবা ফুল। আর জবা ফুল দিয়ে তৈরি চা শরীরের মেটাবলিজম বাড়িয়ে ওজন কমাতে সহায়তা করে। এবং শরীরের চর্বি কমাতে সাহায্য করে। জবা ফুলের চা রক্তচাপ কমাতে কার্যকরী একটি উপাদান, যেটির হৃদরোগ এর ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে।


ইমিউ সিস্টেমেঃ জবাব হলে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে, ইমিউন সিস্টেম শক্তিশালী করার জন্য একটি প্রধান উপাদান। ভিটামিন সি শ্বেত রক্ত কণিকার উপাদান বাড়ায় যা শরীরের রোগ জীবাণুর বিরুদ্ধে লড়াই করতে সহায়ক। শরীরের নতুন কোষের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করে এবং ক্ষতিগ্রস্ত সকল কোষ কে মেরামত করতে সাহায্য করে। জবাব পেলে অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল এবং এন্টিভাইরাল গুণ রয়েছে, যা বিভিন্ন ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের জনিত সংক্রমণ প্রতিরোধ করতে সহায়ক।

জবা ফুলের এন্টি ইনফ্লামেটরি গুণাগুণ রয়েছে যা শরীরের বিভিন্ন প্রদাহ জনিত সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। শরীরের বিভিন্ন অংশে প্রদাহ বা ব্যথা অনেকদিন যাবত চলতে থাকলে ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে যেতে পারে এবং বিভিন্ন রোগা সম্ভাবনা রয়েছে। জবা ফুল শরীরের ব্যথা কমিয়ে শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।

মানসিক চাপ কমায়ঃ অনেকে দেখা যায় অনেক মানসিক চাপ বা ডিপ্রেশনে প্রতিনিয়ত ভুগছেন। এক্ষেত্রে আপনি যদি জবা ফুলের চা সেবন করেন তাহলে মানসিক চাপ থেকে অনেকটা নিজেকে দূরে রাখতে পারবেন। কারণ জবাব হলে চা মনকে শান্ত করতে সাহায্য করে এবং মানসিক চাপ কমায়। তাই নিয়মিত এবং পরিমাণ মতো মানসিক চাপ কমানোর জন্য জবা ফুলের চা খেতে পারেন।

জবা ফুলের উপকারিতা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য

জবা ফুল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং ওজন নিয়ন্ত্রণ সহ আরো অনেক ধরনের উপকারিতার রূপ দেখায়। আর ডায়াবেটিস এর জন্য আমাদের আগে এমন একটি উপাদান প্রয়োজন যে উপাদান রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এবং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করবে। যেহেতু জবা ফুল রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ওজন নিয়ন্ত্রণ করে তাই ডায়াবেটিস রোগের জন্য জবা ফুল অনেক উপকারি। জবা ফুলের বিভিন্ন উপাদান রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। জবা ফুলের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
জবা ফুলের উপকারিতা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য
জবা ফুলের নির্যাস রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখা গেছে যে, জবা ফুলের নির্যাস ইনসুলিনের কার্যকারিতা বৃদ্ধি করে। যা শর্করার মত নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। তবে জবাব হলে চা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অনেক উপকারী হতে পারে। আপনি যদি ডায়াবেটিসের রোগী হয়ে থাকেন তাহলে জবা ফুলের চা সেবন করতে পারেন এক্ষেত্রে অবশ্যই এটি গ্রহণের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন। এবং এর উপকারী ও অপকারী দিকগুলো দেখে এটা সেবন করবে।

জবা ফুলের অপকারিতা গুলো

একটা কথা মনে রাখবেন কোন ভালো জিনিসেরও একটি খারাপ দিক রয়েছে। কারণ অতিরিক্ত কোন কিছু বা নিয়মের বাইরে কোন কিছুই শরীর মন কোনটির জন্যই ভাল নয়। আপনি অসুস্থ থাকলে কোন ঔষধ বা কোন উপাদান যদি পরিমিত পরিমাণে তুলনায় বেশি সেবন করেন তাহলে অবশ্যই আপনাকে ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। তাই জবা ফুলের উপকারিতা ও অপকারিতা দুইটা সম্পর্কে জানতে হবে। এবং কিভাবে সঠিক ব্যবহার করবেন এই সম্পর্ক সঠিক ধারণা নিতে হবে।


জবা ফুলের অপকারিতাঃ 
  • যাদের নিম্ন রক্তচাপ রয়েছে তারা জবাব ফুলের রস সীমিত পরিমাণে বা না খাওয়ায় উচিত কারণ, জবা ফুলের রস রক্তের চাপ কমাতে সাহায্য করে।
  • অন্তঃসত্ত্বা এবং স্তন্যদায়ী মহিলাদের জন্য অনেক ঝুঁকিপূর্ণ।
  • উচ্চ মাত্রায় ব্যবহারের ফলে লিভারের ক্ষতি হয়।
  • ড্রাগ ইন্টার অ্যাকশন হতে পারে।
  • এলার্জিজনিত সমস্যা যেমন, চুলকানি, শ্বাসকষ্ট সহ আরো অনেক প্রতিক্রিয়া হতে পারে।
  • গ্যাস্টিকের সমস্যা হতে পারে।
  • হরমোনের ভারসাম্যহীনতা।
  • অতিরিক্ত প্রস্রাবের সমস্যা।
  • এছাড়া ওষুধের কার্যকারিতার ওপর প্রভাব ফেলতে পারে অতিরিক্ত ব্যবহার করলে।

পঞ্চমুখী জবা ফুলের উপকারিতা

এই জবা ফুলটির নাম পঞ্চমুখী হওয়ার কারণ হলো এই জবাব ফুলের পাঁচটি পাপড়ি বা পাঁচটি মুখ বিশিষ্ট ফুল। গ্রাম অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় এই ফুলটি দেখা যায়। বিশেষ করে হিন্দুদের বাড়িতে এই পঞ্চমুখী জবা ফুল দেখা যায়। এরা এই ফুল দিয়ে পূজার কাজে ব্যবহার করে। এছাড়াও বিভিন্ন নার্সারিতে বা রাস্তার ধারেও এই ফুল দেখা যায়। পঞ্চমুখী জবা ফুলের অনেক উপকার রয়েছে নিচে সেগুলো দেওয়া হলোঃ 
  • পঞ্চমুখী জবা ফুল চুলের যত্নে অনেক কার্যকর।
  • ত্বকের যত্নে অনেক কার্যকর যেমনঃ গ্রীষ্মকালে দেখা যায় মানুষের হাতের ও পায়ের চামড়া উঠে যায় এক্ষেত্রে অনেকেরই এটা নিয়ে অনেক সমস্যা সৃষ্টি হয়। এর জবাব ফুলের প্রলেপ যদি হাত ও পায়ে দেওয়া যায় তাহলে এ সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
  • হজম ক্রিয়া উন্নত করতে সাহায্য করে।
  • এছাড়াও দেখা যায় চোখ ওঠা সমস্যা হয় যাদের তারা যদি এই পঞ্চমুখে জবা ফুলের পেস্ট তৈরি করে চোখের পাতার ওপর দিয়ে থাকে তাহলে অনেক তাড়াতাড়ি পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
  • অনিদ্রা জনিত সমস্যার সমাধান হয়।
জবা ফুল সেবন করার আগে অবশ্যই সতর্ক থাকবেন কারণ জবা ফুলের উপকারিতা ও অপকারিতা এই দুটোই রয়েছে। সাবধানতা অবলম্বন করে এবং জবা ফুলের উপকারিতা ও অপকারিতা দিকগুলো জেনে তারপরে জবা ফুল সেবন করুন।

লাল জবা ফুলের উপকারিতা

বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের রাস্তার ধারে এই লাল জবা ফুল দেখতে পাওয়া যায়। তবে আমরা কয়জনায় বা জানি এই ফুলের উপকারিতা গুলো। এই লাল জবা ফুলের উপকারী দিকগুলো জানতে হলে এবং আরো অন্যান্য জবা ফুল এর উপকারিতা গুলো জানতে হলে আমাদের এই জবা ফুলের উপকারিতা ও অপকারিতা আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়তে হবে। তাহলে আপনি একদম সঠিক ও সুন্দর ধারণা পাবেন। তাহলে আসুন লাল জবা ফুলের উপকারিতা দিকগুলো জেনে নেয়া যাক।
লাল জবা ফুলের উপকারিতা

  • রক্তশূন্য প্রতিরোধ করে লাল জবা ফুল
  • স্টোক ও উদ্বেগ কমানোর কাজে সাহায্য করে।
  • রক্তকে শুদ্ধ করে বা পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।
  • স্নায়বিক স্বাস্থ্য রক্ষা করে।
  • ক্যান্সারের মতো রোগ থেকে নিরাময় পেতে পারেন।

জবা ফুলের বিভিন্ন অংশ

জবা ফুলের বিভিন্ন অংশ রয়েছে যেমনঃ১.পাপড়ি,২.মূল,৩.পাতা, ৪.বীজ, ৫.কান্ড, ৬.ফল, ৭.কলি

  1. পাপড়িঃ জবা ফুলের পাপড়ি মূলত চুলের যত্ন, ত্বকের যত্ন এবং স্বাস্থ্যকর চা প্রস্তুতিতে ব্যবহৃত হয়। জবা ফুলের পাপড়ি চুলের গোড়া মজবুত করে এবং চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
  2. মূলঃ জবা ফুলের মূল সাধারণত আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহার হয়। এটি সাধারণত হজম সমস্যা এবং প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যায় ব্যবহার হয়। পেটের গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য এবং অন্যান্য অধম জনিত সমস্যা সমাধান এবং প্রজনন ক্ষমতা উন্নত করে।
  3. পাতাঃ জবা ফুলের পাতা চুলের যত ত্বকের যত্নে ব্যবহার হয়। এজন্য পাতাকে পিষে পেস্ট তৈরি করে চলে লাগানো হয় ফলে চুলের বৃদ্ধি হয় এবং চুল উজ্জ্বলতা লাভ করে।
  4. বীজঃ তেল উৎপাদনের জন্য জবা ফুলের বীজ ব্যবহার করা হয়। এবং সেই তেল চুলের যত্নে ব্যবহার করা হয়।
  5. ফলঃ জবা ফুলের ফল সাধারণত ওষুধে অর্থাৎ আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়। এছাড়া বিভিন্ন ঔষধ তৈরিতে ব্যবহার করা হয়। রক্ত পরিষ্কার ও হজমের সমস্যা দূর করতে জবা ফল ব্যবহার করা হয়।
  6. কান্ডঃ আয়ুর্বেদিক ঔষধের ব্যবহৃত হয় জবা কান্ড। রোগ প্রতিরোধে এটি সহায়ক।
  7. কলিঃ ফুল ফোটার আগে ফুল যে অবস্থাতে থাকে তাকে সাধারণত ফুলের কলি বলা হয়। এই ফুলের কলি, নির্যাস কিছু রোগ নিরাময় ও ত্বকের পরিচর্যা ব্যবহার করা হয়।

আমার শেষ কথা জবা ফুলের উপকারিতা ও অপকারিতা নিয়ে

আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনি সম্পূর্ণ পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই জবা ফুল সংক্রান্ত সকল বিষয়ে অবশ্যই সঠিক ধারণা পেয়েছেন। জবা ফুল হলো এক ধরনের ভেষজ উপাদান। এর যেমন উপকার রয়েছে তেমন অপকারও রয়েছে। তবে আপনি যদি জবা ফুল ব্যবহার করতে চান তাহলে একটি সঠিক ধারণা আপনাকে নিতে হবে জবা ফুল সম্পর্কে। আর এই সঠিক ধারণা আমরা আমাদের এই আর্টিকেলটির মধ্যে প্রদান করেছি। সম্পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়লে অবশ্যই বুঝতে পারবেন।

জবাব ফুলের অনেক উপকারিতা রয়েছে তবে এটি ব্যবহারের আগে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জেনে এবং আপনার আশেপাশে থাকা ভালো একটি চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সেবন করবেন। এবং অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে সেবন করবেন যাতে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো আপনার শরীরে স্পর্শ করতে না পারে। এবং আমাদের এই আর্টিকেলটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন। আপনি উপকৃত হন এবং অপরকে উপকৃত করুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

SHAMSA2Z নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url