মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান

মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান একদম সঠিক ও নির্ভরযোগ্য তথ্য জানতে চান। তাহলে আমাদের এই পোস্টটি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ুন। মেট্রোরেল সম্পর্কে আপনার জানা অজানা সকল তথ্য নিয়ে এই আর্টিকেলটি আলোচনা করা হয়েছে।

মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান

আমাদের ভাইভা পরীক্ষাতে অথবা বিভিন্ন পরীক্ষার কাজে এই মেট্রোরেল সম্পর্কে আমাদের প্রশ্ন আসে। আমরা যদি মেট্রোরে সম্পর্কে সঠিক তথ্য না জেনে তাহলে আমরা তার সঠিক উত্তর দিতে পারব না। আপনি বাংলাদেশের একজন নাগরিক হয়ে মেট্রোরেল সম্পর্কে আপনার জানা খুবই জরুরী।

পোস্ট সূচীপত্রঃ  মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান

মেট্রোরেল সম্পর্কে অল্প কিছু কথা

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাতে নির্মিতব্য মেট্রোরেল ব্যবস্থায় হল ঢাকা মেট্রো। ধারণা করা হচ্ছে এটি পুরো ঢাকার ট্রাফিক সমস্যা কমিয়ে এনেছে অনেকটা। যেহেতু ঢাকা বিশ্বের জনবহুল মেগা সিটি গুলোর মধ্যে অন্যতম সেহেতু এই শহরে ট্রাফিক সমস্যা দূর করার জন্য মেট্রোরেল প্রকল্প একটি যুগান্তরে পদক্ষেপ। মেট্রোরেল প্রকল্পটি সরকারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়েছিল কিন্তু আজ সেই মেট্রোরেল ঢাকার বুকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। হলে অনেক যানজট কমে এসেছে।

মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান আমাদের খুব ভালো হবে নিতে হবে। আসলে মেট্রোরেল একটি উন্নত মানের গণপরিবহন ব্যবস্থা যেটি শহরে পরিবহনের সমস্যা গুলো সমাধান দিতে সহায়ক। এটির শহরের ব্যস্ত সড়কগুলোতে ট্রাফিকের চাপ কমাতে এবং যাত্রীদের দ্রুত ও আরামদায়কভাবে গন্তব্যে পৌঁছাতে সাহায্য করে যাচ্ছে। মেট্রোরেল ব্যবস্থা বিশ্বের অনেক দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং তা বিভিন্ন ধরনের প্রকৌশল ও প্রযুক্তিগত নকশার মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

মেট্রোরেল এর সংজ্ঞা

 মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান এর প্রথম বিষয়টি হচ্ছে মেট্রোরেলের সংজ্ঞা আমাদের জানতে হবে। মেট্রোরেল এর সংজ্ঞা দেখলে আমরা পাই যে মেট্রো রেল বা মেট্রো একটি উচ্চ ক্ষমতার ট্রেন ব্যবস্থা যা মূলত শহরের ভিতরে ও কাছাকাছি দূরত্বের মাধ্যমে পরিবহন ব্যবস্থার সুবিধার্থে তৈরি করা একটি যন্ত্র। অধিকাংশ সময় সাবওয়ে বা এলিভেটেড লাইনে পরিচালিত হয়। এটি সাধারণত বিদ্যুৎ দ্বারা পরিচালিত হয় এবং নির্ধারিত স্টেশনগুলোতে থামে।


আবার আরও একটি সংজ্ঞায় বলা যায় যে, ঢাকা মেট্রো রেল ব্যবস্থাকে ম্যাচ রেপিড ট্রান্সপোর্ট সারসংক্ষেপে এম আর টি হিসেবে উল্লেখ করা হয়। এটি সুবিধা জনক, দ্রুতগামী এবং স্বাচ্ছন্দ্যময় নগর কেন্দ্রিক যানবাহন।

মেট্রোরেল এর প্রকল্প বর্ণনা

২০১২ সালের ১৮ই ডিসেম্বর সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার মেট্রো রেল প্রকল্প জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে অনুমোদন পায়। এটি উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য। মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান এর বিশেষ কিছু তথ্য সমূহ।
  • ১৬টি স্টেশন রয়েছে।
  • ঘন্টায় ৬০ হাজার যাত্রী পরিবহন করা সম্ভব হয়।
  • প্রতি ট্রেনে ১৮০০ জন যাত্রী চলাফেরা করতে পারে।
  • সকাল ৬টা থেকে রাত ১১ টা পর্যন্ত ট্রেন চালু থাকে।
  • একটি স্টেশনে ট্রেন অবস্থান করবে ৪০ সেকেন্ড।
  • মোট ৫৬ টি ট্রেন চলাচল করছে।
  • প্রথম ধাপ পল্লবী থেকে সোনারগাঁও হোটেল পর্যন্ত। একটু পরিকল্পনা হয়েছিল ২০১৯ সালের মধ্যে।
  • দ্বিতীয় ধাপ পল্লবী থেকে সোনারগাঁও হোটেল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যন্ত। এটির চালুর প্রকল্প ২০২০ সালের মধ্যে কথা হয়েছিল।

মেট্রোরেল এর প্রকল্প উদ্বোধন

প্রথম ধাপ পল্লবী থেকে সোনারগাঁও হোটেল পর্যন্ত হওয়ার কথা থাকলেও সরকার প্রথম পর্যায়ে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত  ১১ কিলোমিটার পর্যন্ত উদ্বোধন করেন। ঢাকা মেট্রো রেল প্রকল্পের প্রথম অংশের উদ্বোধন করা হয় ২০২২ সালের ২৮ ডিসেম্বর। এর সূত্র ছিল ডেইলি স্টার এবং ২ আগস্ট ২০১৭ তে।

মেট্রো রেলের সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ সমূহ সম্পর্কে জানুন

সুবিধাসমূহঃ মেট্রোরেলের সুবিধা গুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে এটি পরিবেশবান্ধব। যেহেতু মেট্রোরেল বিদ্যুৎ দ্বারা চলে এটি বায়ু দূষণ কমায়। বাস্তব শহরের দ্রুত গতিতে গন্তব্যে পৌঁছানোর মাধ্যম যে এটি বেশ কার্যকর। উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকার কারণে এটি অত্যন্ত নিরাপদ একটি পরিবহন ব্যবস্থা। শহর যানজট কমাতে এর ব্যাপক ভূমিকা রয়েছে। মেট্রোরেল চালু হওয়াতে ঢাকার মানুষের অনেক ধরনের সুবিধা হয়েছে এবং পরিবেশনও ব্যাপক উপকার হচ্ছে।
মেট্রোরেলের সুবিধা ও চ্যালেঞ্জ সমূহ সম্পর্কে জানুন
চ্যালেঞ্জঃ মেট্রোরেল নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় এতে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে যায় তবুও এখনো সুন্দরভাবে মেট্রোরেল চলছে বাংলাদেশে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণের জন্য উত্তর প্রশিক্ষিত জনশক্তি প্রয়োজন। অধিক জনবসতি ও সংকীর্ণ সড়কের কারণে মেট্রো নির্মাণের জায়গা নির্বাচন করা অনেক সময় চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েছিল। মেট্রোরেল একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয় হলেও এটি বাংলাদেশের সরকার করেছেন।

প্রকল্প ব্যয় ও অর্থায়ন মেট্রোরেলে

প্রকল্প ব্যয়ঃ ঢাকা মেট্রোরেল প্রকল্পের ব্যয় প্রাথমিকভাবে নির্ধারিত হয়েছিল প্রায় ২২০ মিলিয়ন টাকা। তবে প্রকল্পের সময়সীমা এবং বিভিন্ন কারণে এই ব্যয় কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে।


অর্থায়নঃ মেট্রোরেল প্রকল্পটি বাংলাদেশের সরকার এবং জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো অপারেশন এর যৌথ অর্থায়নে বাস্তবায়িত হয়েছে। JICA এই প্রকল্পের জন্য মোট ব্যয়ের একটি বিশাল অংশ ঋণ হিসেবে প্রদান করেছে, যা প্রায় ১৬৫ বিলিয়ন টাকা। বাকি অর্থ বাংলাদেশ সরকার নিজের সব বাজেট থেকে প্রদান করেছেন। ঋণ গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বল্প সুদে দীর্ঘমেয়াদি ঋণ হিসেবে অর্থায়ন করা হয়েছে, যা বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর কম চাপ সৃষ্টি করেছিল।

যানজট দূরীকরণে মেট্রোরেল

যানজট দূরীকরণে মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান আসন জেনে নিই। ঢাকায় বর্তমানে ১.৭০ কোটির লোক বেশি বসবাস করে। আয়তনের তুলনায় এই জনসংখ্যা অনেক বেশি। তাই সম্ভব আমাদের নিত্য সঙ্গী। মেট্রোরেল প্রকল্প ঘন্টায় ৬০ হাজার যাত্রার বহন করে বলে যান অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। যদিও কোন কোন ক্ষেত্রে যানজটের সৃষ্টি হয় তবুও, ঢাকার জনযাট দূরীকরণ এর ক্ষেত্রে মেট্রোরেল বিশেষভাবে ভূমিকা রাখছে।

জনগণ সহজে চলাফেরা করতে সুবিধা জনক

জনসংখ্যা তুলনায় ঢাকায় যানবাহনের সংখ্যা অফ অপ্রতুল। লোকজন পাবলিক যানবাহনের পাশাপাশি করে যাতায়াত করেন। বৃদ্ধ শিশু প্রতিবন্ধী এবং নারীদের জন্য এভাবে চলাচল করা খুবই কষ্টকর। মেট্রোরেল যথাসময়ে অনেক যাত্রী পরিবহন করবে বলে লোকজন স্বাচ্ছন্দে চলাফেরা করতে পারে।
জনগণ সহজে চলাফেরা করতে সুবিধা জনক

অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী এবং সময়ের অপচয় রোধ

মেট্রোরেল প্রকল্প ঢাকা বাসের পরিবহন খরচ অনেক অংশে কমিয়ে দিয়েছে। সরকার এই প্রকল্প থেকে ব্যাপক অর্থ উপার্জন করছে। আমাদের জিডিপি বৃদ্ধি পাবে। মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞানে আমরা আরো অনেক কিছু জানি চলুন। ঢাকাবাসীর প্রধান সমস্যা হলে সময় অনুযায়ী কর্মসংস্থানে পৌঁছাতে না পারা। মেট্রোরেল প্রতিটি স্টেশনে মাত্র ৪০ সেকেন্ড দাঁড়ায়। তাই সকলের নির্ধারিত সময় যার যার কর্মসংস্থলে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। ঠিক এভাবে অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী ও সময়ের অপচয় রোধ হয়।

সুন্দর এবং পরিষ্কার ঢাকা

মেট্রোরেল প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে অকেজ যানবাহন হ্রাস পেয়েছে। যত্রতত্র যানবাহনের জট থাকছে না তেমন। পরিকল্পনা অনুযায়ী যানবাহন চলাচল করছে। যাত্রীরা নির্ধারিত স্থান থেকে উঠানামা করছেন। ফলে একটি সুন্দর ও পরিষ্কার ঢাকা উপহার দেওয়া সম্ভব হয়েছে। রেলের ধারাবাহিক চলাচল মনোরম দৃশ্য ধারণ করেছে। বিশ্ববাসীর কাছে আর ঢাকা অপরিষ্কার নগরী হিসেবে স্থান নেই বললেই চলে। বিদেশীরা বিনিয়োগে আকর্ষণ দেখাবেন।

লেখকের মন্তব্যে মেট্রোরেল সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান

এক সমীক্ষায় দেখা গেছে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে গড়ে ১৭০০ মানুষ নতুন বসবাসকারী হিসেবে ঢাকায় আসেন। এমনিতে ঢাকায় জনসংখ্যার ঘনত্ব অন্যান্য শহরের তুলনায় অনেক বেশি আবার তি জনসংখ্যা চাপ মোকাবেলার জন্য মেট্রো রেল প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পরিবহন করতে পারে বলে ট্রাফিক জ্যাম দ্রুত সমাধানের দিকে যাচ্ছে। পরিবেশ বান্ধব এবং পরিকল্পিত নগরী হিসেবে বিশ্বে পরিচিত লাভ পাচ্ছে আমাদের ঢাকা শহর।

আমাদের পোস্টে যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে আপনি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করতে পারেন। এবং এই পোস্টটি যদি আপনি সম্পূর্ণ মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই অনেক কিছু জানতে পেরেছেন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

SHAMSA2Z নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url